কিয়ামতের তিনটি আলামত এর মাঝে দাজ্জালের জন্ম হলো একটি। দাজ্জাল কে? দাজ্জাল শব্দটির সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ ( মুসলিম ) খুব কম পাওয়া যাবে। কেয়ামতের একটি বড় ও ভয়াবহ আলামত হচ্ছে দাজ্জাল। দাজ্জাল নামটি শুনতেই যেন মনের মাঝে একটা ভয় কাজ করে। ইসলাম ধর্মে বলা আছে দুনিয়া যখন শেষ জমানায় পৌছাবে তখন দজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। আজকের আলোচনায় আমরা দাজ্জাল কে এবং দাজ্জালের জন্ম কিভাবে আর দাজ্জাল কত দিন পৃথিবীতে থাকবে সে সম্পর্কে জানব।
দাজ্জাল কে?
আল-মাসিহ আদ দাজ্জাল। যার অর্থ ভ্রান্ত মশীহ, মিথ্যাবাদি বা প্রতারক। ইসলামিক বিচরণতত্ত্বের ভাষায় দাজ্জাল এক দুষ্ট ব্যক্তিত্ব। ইয়াওম আল কিয়ামাহ ( কিয়ামতের দিন ) এর আগে দাজ্জাল আল-মসিহ ( মশীহ ) হওয়ার ভান ধরে উপস্থিত হবেন। তিনি একজন এন্টিখ্রিষ্ট (Antichrist) খ্রিষ্টান এস্থাটোলজিতে (Christian eschatology) এবং এন্টি মেসিয়ানিক (anti-messianic) ব্যক্তিত্ব।
দাজ্জাল পৃথিবীতে কত দিন থাকবে?
চল্লিশ দিন, এক বছরের মতো, এক মাসের মতো, এক সপ্তাহের মতো বা বাকী দিনগুলি আমাদের সাধারণ মানুষের মত। আখিরাতের পূর্বেই দাজ্জাল এর আবির্ভাব ঘটবে।
Related: ভূনা করা মাছ কিভাবে লাফ দিল জানতে ক্লিক করুন।
দাজ্জাল দেখতে কেমন হবে ?
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) দাজ্জালের যে বর্ণনা করেছেন তা অন্য যে কোন ধর্মগ্রন্থের তুলনায় একেবারেই স্পষ্ট। দাজ্জাল উচ্চতায় হবে খাটো এবং চোখে পরার মতো বিশেষ কপাল ও প্রশস্ত ঘাড় থাকবে। সে খুব শক্তিশালী হবে এবং তার পেছনে একটি কুজ থাকবে। তার মাথায় লম্বা ও কোকড়ানো চুল থাকবে যা খুব ঘন হবে। ঝুলন্ত অবস্থায় দাজ্জালের চুল অনেকটা সাপের মত দেখাবে। দাজ্জাল পায়ে হাটবে তবে সাধারণ মানুষের মতো নয়, একটু আলাদা। দজ্জালের দুই ব্রু এর মাঝে কপালে “কাফির” কথাটি লিখা থাকবে।
দাজ্জালের জন্ম কিভাবে?
আল্লাহ তায়ালা দাজ্জালকে তৈরী করবেন, কোন নারী হতে তার জন্ম হবে না। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, দাজ্জালের কোন পরিবার হবে না। তার কোন সন্তান হবে না। সে একা। এমনকি সে পুরুষ হবে। সে কোন মহিলা নয়, নয় কোন জাতি, নয় কোন তত্ত্ব। সে একজন জীবিত মানুষ হবে এবং পরুষ হবে।
Related: মুসা (আঃ) কর্তৃক খিযির (আঃ) হইতে এলেম আহরণ সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন।
মানুষ কেন দাজ্জালকে অনুসরন করবে ?
স্বাভাবিক অর্থে আপনার মনে এই প্রশ্ন টা জাগতে পারে – আমি জানি Dajjal এক চোখা হবে আর দাজ্জাল সম্পর্কে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন। এর পর তো কোন কথাই থাকে না দাজ্জালকে অনুসরন করার। আপনার কথার সাথে আমিও একমত। আমার মনেও এই প্রশ্নটি এসেছিল। তবে আপনার সাথে একটা ঘটনা শেয়ার করি।
আমাদের দেশে অনেক আল্লাহর অলি আউলিয়ারা এসেছিলেন ইসলাম প্রচার এর লক্ষ্য। তারা আমাদের খারাপ পথ থেকে ভাল পথে আসার আহব্বান জানিয়েছেন। বিভিন্ন পরিবেশ পরিস্থিতিতে তারা অনেক অলৌকিক মুজেজা দেখিয়েছেন। যা অবশ্যই আল্লাহর ইশারায় হয়েছে। আজ তারা বেচে নেই। তাদের কবরকে পুজি করে গড়ে ঊঠেছে মাজার, আর মাজারে যে সকল কর্মকান্ড হচ্ছে নিশ্চই তারা আমাদের সে দিক নির্দেশনা দেন নি।
আর এ দিকে দাজ্জালকে আল্লাহ তায়ালা এমন ক্ষমতা দিবেন যে, সে যা চাইবে তাই করতে পারবে। আকাশ থেকে বৃষ্টি নামাবে, মৃত মানুষকে জীবিত করবে, দিনকে রাত আর রাতকে দিনে রুপান্তর করবে। তখন মানুষ তার এই অলৌকিক ক্ষমতা দেখে বিব্রান্তের মাঝে পরে যাবে। ইমানদারগন তাদের ইমান নিয়ে পেরেশানিতে পরে যাবেন। অলৌকিক ঘটনা দেখে তারা অন্ধ বিশ্বাস করা শুরু করবে দাজ্জালকে। দাজ্জাল সে নিজেকে সৃষ্টিকর্তা বলে দাবি করবে (নাউজুবিল্লাহ)।
Related: ইলুমিনাতি চিহ্ন, ইলুমিনাতি কি ? ইলুমিনাতি কারা ? ইলুমিনাতি ও ইসলাম এর মাঝে কি সম্পর্ক ?
দাজ্জাল কে আমরা জানতে পারলাম। আমাদের একটা জিনিস মনে রাখতে হবে অলৌকিকতা ইসলামের মূলনীতি নয়, কোরআন হাদিস হলো ইসলামের মূলনীতি। বলা হয়েছে যারা দাজ্জাল এর সময়ে জীবিত থাকবেন তারা যেন দাজ্জালের হাত থেকে বাচার জন্য সূরা আল কাহফের প্রথম আয়াত তেলাওয়াত করে। আমরা আল্লাহর কাছে পানহা চাই যে আল্লাহ আমাদের সকল ফিতনা থেকে বাচিয়ে রাখেন। এমনকি সকল প্রকার পাপাচার থেকে বিরত রাখেন।
জানস
দাজ্জাল তো একচোখ কানা থাকবে! কিন্তু এখানে প্রতিকী হিসেবে কি দেওয়া হয়েছে?
জানার ইচ্ছা
পোষ্টের ভিতরে এক চোখের ছবি দেয়া আছে।