মজার রেসিপি মসুর ডালের তরকা। খাবার, এই নাম এর সাথে আমরা সবাই পরিচিত, সকালে ঘুম থেকে উঠা শুরু করে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত খাবার আমাদের সবারই প্রিয় । খাবার সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে জেনে নিই এর রন্ধন কোথা থেকে উৎপত্তি? আরেকটা কথা বলিনি সেটা হল আজ আপনাদেরকে ঘরে থাকা খুবই সাধারণ কিছু উপকরন দিয়ে সহজ উপায়ে কিছু রেসিপি জানাব, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকার, খুব সহজেই কম সময়ে রান্না করা যাবে তো চলুন জেনে নেই কিভাবে ডালের তরকা রান্না করতে হয়।
রন্ধন শিল্পের ইতিহাস
মধ্যযুগীয় রন্ধন মূলত পাঁচশ থেকে পনের’শ শতক পর্যন্ত মধ্যযুগীয় সময়কার ইউরোপের নানা সংস্কৃতির রন্ধন প্রণালী, খাদ্য, খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে। তখনকার সময়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাসের ও রন্ধনপ্রণালীর তেমন একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যেতনা যেমনটা বর্তমান সময়ে দেখা যায়। যদিও এ পরিবর্তনের হাত ধরেই বর্তমান ইউরোপীয় রন্ধনের সূচনা হয়। মধ্যযুগের শুরু থেকে খাদ্যশস্যই ছিল মানুষের প্রধান খাদ্য।পরবর্তীতে ভাত জাতীয় খাবারের সাথে মানুষ পরিচিত হয় এবং ১৫৩৬ সাল নাগাদ আলু কে প্রধান খাদ্য হিসেবে তুলে ধরা হয়। তখন বার্লি, ওট এবং যব এসব খাদ্যশস্যকে ‘দরিদ্রের খাবার’ হিসেবে ধরা হত। অভিজাতদের খাদ্য ছিল আটা ও ময়দায় তৈরি রুটি,জাউ,পাস্তা ইত্যাদি। মটরশুঁটি ও বিভিন্ন প্রকার সবজি দিয়ে এসব খাবার খাওয়া হত।
Related: দাজ্জাল কে? ইলুমিনাতি ও দাজ্জাল সম্পর্কে জানুন।
তখনকার যুগে মাংস ছিল বেশ দামী এবং মাংস খাওয়াকে বেশ সম্মানের চোখে দেখা হত। বিশেষ করে শিকার হতে প্রাপ্ত মাংস অভিজাত শ্রেণিদের টেবিলে শোভা পেত। শূকর ও মুরগির মাংস ছিল বহুল প্রচলিত। তবে গরু ও অন্যান্য বড় গৃহপালিত পশুপাখি পালনে বেশি খরচ হত বিধায় এসবের মাংসের খুব বেশি প্রচলন ছিলনা।
আবার উত্তর ইউরোপের মানুষের আমিষের প্রধান উৎস ছিল সামুদ্রিক ও নদীর মাছ। মাছের মধ্যে কড এবং হেরিং ছিল প্রধান। তারা এসব মাছকে ধোঁয়ায় শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখতো। এর ফলে ধীরগতির যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং খাদ্য সংরক্ষণ প্রণালীর সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য প্রক্রিয়া অনেক খাদ্যদ্রব্য সমূহ এবং দূর দূরান্তে বাণিজ্যকে অনেক ব্যয়বহুল করে তোলে।
Related: ভূনা করা মাছ কিভাবে লাফিয়ে পড়ল জানতে ক্লিক করুন।
আর ঠিক একারণেই দরিদ্র শ্রেণির খাবারের তুলনায় অভিজাত শ্রেণির খাদ্যদ্রব্য এবং খাদ্যাভ্যাসে ভিনদেশিদের প্রভাব বেশিমাত্রায় পরিলক্ষিত হয়। বিদেশি মসলা আমদানি নির্ভর হওয়ায় বেশি খরচ পড়ত। আর সমাজের প্রত্যেক শ্রেণি তার চেয়ে ধনী শ্রেণিদের অনুকরণ ও তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করত। এর ফলে ১২শ শতাব্দী থেকে ধীরেধীরে আন্তর্জাতিক ও বৈদেশিক বাণিজ্যিক যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে মধ্যযুগীয় নগরী সমূহের উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে।
মসুর ডালের তরকা তৈরীর উপকরণ
- মসুর ডাল
- আলু
- পেয়াজ কুচি
- রসুন কুচি
- কাচা মরিচ
- লবণ
- হলুদ গুড়া
- তেজপাতা
- জিরা
- শুকনা লঙ্কা
মসুর ডালের তরকা রন্ধণ প্রনালী
আমাদের বাসায় চাল ডাল আলু এই তিনটা জিনিস আমাদের সবার বাসায় থাকে, খুব অল্প সময়ে কিভাবে মসুর ডালের তরকা রান্না করে নেওয়া যায় সেটাই জানাবো, মসুর ডালের তরকা বানাতে যা যা লাগবে মসুরের ডাল আমাদের প্রায় সবার বাসায় তে থাকে, প্রথমে মসুর ডাল ১কাপ ভালো ভাবে ধুয়ে ,ছোট ছোট কিউব করে আলু গুলোকে কেটে, তার সাথে সামান্য পেয়াজ কুচি, হাফ চা চামচ রসুন কুচি ,৫/৬টি কাচা মরিচ পরিমাণ মত লবণ ,হাফ চা চামচ হলুদ গুড়া ১কাপ পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিতে হবে, সিদ্ধ হয়ে গেলে তারপর অন্য একটি কড়াইতে হাফ কাপ পেয়াজ কুচি, সামান্য একটু রসুন কুচি, একটা তেজপাতা সামান্য একটু জিরা ,দুটি শুকনা লঙ্কা কুচি করে কাটা ,একসঙ্গে খুব ভালোভাবে ভেজে নিয়ে সিদ্ধ করা ডালের সাথে দিতে হবে, বেস হয়ে গেল ডালের তরকা গরম গরম ভাতের সাথে খেতে খুবই ভালো লাগে । মসুরের ডাল দিয়ে শুধু ডালের তরকা না বিভিন্ন খাবার তৈরি করা যায় যেমন-ডালের চচ্চড়ি, ডালনা, নিরামিষ, পিঁয়াজু, ডালপুরি, ডালের স্যুপ, আম ডাল, পুঁই ডাল ইত্যাদি।
মসুর ডালের উপকারিতা
এখন বলি মসুর ডালের উপকারিতা কি? মসুর ডাল প্রোটিনের আধার বলে একে মাংসের বিকল্প হিসেবেও ধরা হয়। মসুর ডাল শুধু সুস্বাদুই নয় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। যেমন, খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নিয়োমিত মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাছাড়া মসুর ডাল ফলেট এবং ম্যাগনেসিয়াম এর একটা বিরাট উৎস, যা হার্টকে আরও বেশি তারুন্য পেটে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের সর্বত্র রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি প্রবাহ করতে সাহায্য করে।মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার এটা দ্রবণীয় ফাইবার থকে যা রক্তের কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটি আপনার শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে আপনার ধমনীকে পরিষ্কার রাখে।মসুর ডালের ফাইবারে আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শরীর চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তাছাড়া এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে।মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ রয়েছে। ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার।বাড়তি ওজন কমাতে চাইলে ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তার বদলে নিয়মিত ডাল খেতে পারেন। তাহলে আজ আমরা শিখলাম কিভাবে মসুর ডালের তরকা রান্না করতে হয় এবং মসুর ডালের উপকারিতা কি। আমরা আজ মসুর ডালের তরকা কিভাবে বানাতে হয় ও মসুর ডালের উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।